ঢাকা, , ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

আলুতে আত্মসাৎ ৩০কোটি টাকা

টাইমসনিউজটোয়েন্টিফোর.কম

Tuesday,16 January 24 01:32:52

 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যভান্ডারের হিসাবে ২০২০ সালে আলু রপ্তানিতে তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে ছিল রাজধানীর মতিঝিলের অন্তরা করপোরেশন। ওই বছর প্রতিষ্ঠানটি ৯৬টি চালানে প্রায় ৩৭ কোটি টাকা মূল্যের ১৫ হাজার ৫৮৮ মেট্রিক টন আলু রপ্তানি করে।

অবশ্য চট্টগ্রাম কাস্টমস তদন্ত করে প্রমাণ পেয়েছে, আসলে অন্তরা করপোরেশন একটি আলুও রপ্তানি করেনি। বরং জাল নথিপত্র জমা দিয়ে সরকারের কাছ থেকে তারা আলু রপ্তানির বিপরীতে সাড়ে সাত কোটি টাকা নগদ সহায়তা নিয়েছে।

অন্তরা করপোরেশনের মতো ১০টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে চট্টগ্রাম কাস্টমস জানতে পেরেছে, এসব প্রতিষ্ঠান ৪২২টি চালানে ১ কোটি ৯১ লাখ মার্কিন ডলারের (প্রায় ১৬৪ কোটি টাকা) আলু রপ্তানি দেখিয়েছে, যা পুরোটাই ছিল ‘গায়েবি’। কোনো রপ্তানি না করেই তারা সরকারের কাছ থেকে ৩০ কোটি টাকার বেশি নগদ সহায়তা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে।

‘গায়েবি’ আলু রপ্তানির বেশির ভাগ ঘটনা ঘটেছে ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের মধ্যে। দীর্ঘ সময় ধরে তদন্ত করে চট্টগ্রাম কাস্টমস গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ১০টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আরও ৪৮টির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। কাস্টমসের কর্মকর্তারা বলছেন, পুরো তদন্ত শেষ হলে আরও জালিয়াতি ও আরও বিপুল অর্থ আত্মসাতের তথ্য বেরিয়ে আসবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার মো. বদরুজ্জামান মুন্সী প্রথম আলোকে বলেন, তাদের ২০টি দল জালিয়াতি নিয়ে তদন্ত করছে। যে কয়েকটির তদন্ত শেষ হয়েছে, সেসব রপ্তানিকারকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। ‘গায়েবি’ রপ্তানির ক্ষেত্রে আলুকে কেন বেছে নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলু রপ্তানিতে সরকার ২০ শতাংশ সহায়তা দেয়। এ ক্ষেত্রে হয়তো জালিয়াতিতে ঝুঁকি কম মনে করেছে চক্রটি।

রপ্তানির ‘অর্ধেকই গায়েবি’

অপ্রচলিত বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে সরকার নগদ সহায়তা দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪৩টি পণ্য নগদ সহায়তা পাচ্ছে। সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা পাওয়া পণ্যের একটি আলু। মানে হলো, কোনো প্রতিষ্ঠান ১০০ টাকার আলু রপ্তানি করলে ২০ টাকা সরকার ভর্তুকি দেয়।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ৫ কোটি ৮ লাখ ডলারের আলু রপ্তানি হয়, যা তখনকার মূল্যে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৩৭ কোটি টাকার সমান।

বাংলাদেশ থেকে যত আলু রপ্তানি হয়, তার ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ যায় চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে। সেখানে বেসরকারি ডিপোতে (পণ্য রাখার জায়গা) আলু কনটেইনারে ভরা হয়। তখন আলুর নমুনা পরীক্ষা করে স্বাস্থ্যসনদ দেয় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র।

Prothom Alo

পাঠকের মন্তব্য